Showing posts with label প্রিয় কবির কবিতা. Show all posts
Showing posts with label প্রিয় কবির কবিতা. Show all posts

Wednesday, December 15, 2021

শব্দব্রাউজ :: শূন্যের অস্তিত্ব ; কবিতারা ।। সৌমিত্র রায় ।। প্রিয় কবির কবিতা,Soumitra Roy

শব্দব্রাউজ :: শূন্যের অস্তিত্ব ; কবিতারা

সৌমিত্র রায়



মেদিনীপুর ; ১৮-০৯-২০১৮ ; সকাল ৭টা ২৯ ; কাব্যযোগ শেষে এন্ড্রয়েড ছুঁয়েই কিছু লিখতে চাইছি ৷ এই যে সকাল সকাল দেহ-মনের পরিচর্যা এবং আবার কবিতায় বসা ৷ এইভাবেই সময়কে কাজে লাগানো ; এটাই স্বব্যবস্থাপনা আমার ৷


শব্দসূত্র :: কাশ দুলছে নদীর পাড়ে


কাশ ; রাশি রাশি কাশ ৷ ভোরের হাওয়ায় ; তাদের দুলুনি ; রঙ ছড়াচ্ছে কবির বুকে, তাও অদৃশ্য ৷ কাশের নিজের কোনো রঙ নেই ৷ কাঁসাইয়ের ঢেউয়ের নিরন্তর জন্মমৃত্যু , শূন্যের অস্তিত্বকেই বুকে ধরে বেঁচে আছে অনন্তকাল ৷ কবিমন ; আকাশ ; ঢেউ-চিন্তন ; নদীর গতিপথে অনন্ত রহস্য আঁকছে ৷

দুলছে অজস্র বাবলার পাতা ; অস্থির ৷ এমন ছন্দে আমার কবিতারাও জানিয়ে দিচ্ছে : কবিতা তো সাহিত্যের টেকনিক্যাল শাখা ৷ জীবন-চেতনার সেরা টেকনোলজি ৷ সব মাত্রারা ফুরফুরে হাওয়ার অস্তিত্বে ৷ শ্বাস-প্রশ্বাসের নিরন্তর রিদম কবিতার প্রযুক্তিতে ৷ দুলে ওঠা, অক্ষরে নিহিত প্রাণ ৷

নদীর ঠিকানা ; নদী মনে রাখে না ৷ সব ঢেউ ; জন্মমৃত্যু ; ঠিকানাবিহীন ৷ স্রোত একটাই ৷ ফেসবুকে অজস্র কবিতার মতো ৷

পাড়ে যে মেয়েটি বসে ৷ হাতে জাল ৷ নেমেছিলো জলে ৷ ওর জেলে-রঙা কাপড়ে কাশের দুলুনি নেই ৷ তাকানোতে শূন্যতার আলো ৷ কোঁচড়ের মাছেরাও বুঝিয়ে দিচ্ছে ~ জল ; কাশ ; জীবনের সবটুকু বর্ণহীন ৷ রোদের রহস্য ছাড়া ৷

কাশ দুলছে নদীর পাড়ে ৷ দুপুরে বিষাক্ত যে রোদ ; ভোরে তা-ই ঔষধি ! দুপুরে যে জীবন বিবর্ণ, সকালে বর্ণময় ৷ রোদ রঙা কাশে ৷ নদী পাড়ে ৷ ৷৷ শান্তি ৷৷

ঘুড়ির নাম স্বজন ।। অলোক বিশ্বাস ।। প্রিয় কবির কবিতা, Alok Biswas

ঘুড়ির নাম স্বজন 

অলোক বিশ্বাস



পূর্ণতা সহকারে ঘুড়ি নেমে আসে।  নামে সেখানে, যেখানে নীরবতা নিয়ে ব'সে আছি আমি। যদি হৃদয়প্রদেশে রাখা যায় কিছু ঘুড়ি, কেমন হয়, ভাবছি তাহা। সেই প্রকার হৃদয়, যাহা কেবল বেদনায় ভরা, সেইখানে ঘুড়ি ওড়ে কিভাবে। ঘুড়ি এলে উপেক্ষিত হৃদয়ে, কেমন হয়, ভাবছি তাহা। উপেক্ষাগুলি নীরবতা হয়ে জেগে থাকে। নীরবতা ভুলে যেতে সকলের সাথে গ্যালারিতে ব'সে 

হাততালি দিই। মিছিলে শ্লোগানে এ্যাতো এ্যাতো কণ্ঠ মিলিয়ে, নীরবতার চোখ থেকে একফোঁটা আগুন ঝরাতে পারিনি। সামনে অনেকগুলো বেদনাময় ব্রিজ। সামনে আরো বিশাল জনপদ সহায়তাহীন জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছে। পোড়বার পর তাহারাও সম্পূর্ণ নীরব হয়ে যাবে।  সেইসব নীরবতা লক্ষ্য কোরেছে, এমন সাক্ষীও হয়তো একদিন কেউ থাকবে না। চলনবিলে উড়ে যাওয়া কোনো মাছরাঙা আমার অনুভবগুলি হয়তো অনুভব করে। আমি কি জানি নীরবতার মুদ্রাগুলি কোথায় কিভাবে খেলে।  আমি কি জানি কোথায় রাখতে হবে চিহ্নগুলি। একটা ঘুড়ি উড়ে আসে আমার সম্মুখে এবং কিছু প্রশ্ন বাড়িয়ে দেয়। নীরবে তাকিয়ে আছি স্নেহময় ঘুড়িটির দিকে...

Friday, December 10, 2021

অচিন্ত মারিক- এর কবিতাগুচ্ছ ।। প্রিয় কবির কবিতা, Achinta Marik

অচিন্ত মারিক- এর কবিতাগুচ্ছ ।। প্রিয় কবির কবিতা




পরাবাস্তব


এক মুহুর্তের জন্যও আমি 

পৃথিবীর কোনো কাজে আসিনি স্তরে বিস্তরে 

তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই 

হৃদয় বিছিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম মৃত্যুর অলিন্দে

ইতিহাস আর সংস্কৃতে ফেল মার্কশিট হাতে নিয়ে

জঞ্জাল মুহূর্ত সরিয়ে রেখে একটা লাফ দেব ভাবছি

কিন্তু অর্জিত উচ্চতা কম। 

তাই সেদিন মৃত্যুদীপ সলতে জ্বালিয়ে যায়নি


এখন রোজকার যাত্রী রেলের 

যখনই সেতু পেরোই, নদীর বালিময় দৃশ্য

চোখের প্রতিবেশী হয়ে থাকে 

আমার দীর্ঘশ্বাস অক্ষর হয়ে ভেজা বালিতে

শুয়ে পড়ে গোঙায়

সেই পংক্তিময় বালির স্তুপ ক্রমে উচ্চ হয়

কংক্রিটের জ্যামিতিতে আটকে যাবে পলেস্তারা।

বেচারা বালির অক্ষর!

কেউ একটা পাত্রে ঢালছে জল, ঢালছে অক্ষর

বালির উপর দিয়ে নদীর নেমে আসা চিহ্নে 

জল গভীর হয়, তবু বালি অবিরাম শুকনো।


পলাতক দিন রাত্রি


হারানো দিনগুলি রাতেও ফেরেনি

বহু ক্লেশে রাত জেগে দিনের পিঠে তৈরি শেষ

এবার হয়তো ফিরবে খুনসুটি নিয়ে

দিনের আলো অনেক অনেক দূরে রয়েছে

দূরে সরেছে সম্পর্কের মরদ ভাবনা

শুকনো শরীরে রঙের তীব্রতা স্পষ্ট হচ্ছে

মোদ্দা কথা এখানে কেউ কাউকে ভালোবাসে না।

না অন্ধকারে না আলোয়


পদ্য : দুই


নদীতটের মান ভাঙাতে 

পাতার খসে পড়া ভাষা ঘর বাঁধে কবিতায় 

সেও এক নূতন ভাষা পতনের 

জিহ্বার তরঙ্গদৈর্ঘ্য তখন সুরের তালে যুগলবন্দী

এটা জানা মুশকিল নয় ভাষা বুঝলে

শ্লোকের অর্থ সহজে করা যায় কি না

এমন অনেক ভাষা আছে

প্রতিদিন যাচ্ছে হারিয়ে

কোনো উপায়ে পাতাগুলোর খসে পড়া

এবার বন্ধ করতেই হবে



পদ্য : এক


রোদের ঝাঁঝ তুমি অপছন্দ করতে পারো

তবু সুর্য কিরণ দেবেই

বৃষ্টির টাপুর টুপুর কি়ংবা অঝোর পড়া

তুমি বন্ধ করতে পারবে না - পড়বেই।

বৃষ্টি কী অবিরত? এখানে থামলেও 

অন্য কোথাও সে কি ঝরে পড়ছে?

তোমার চোখের সামনে বৃষ্টি বিধৌত জলস্রোত

ধীরগতিতে নদীতে এসে মিশবে!

তাই এই কবিতা দেখে তুমি যদি বলো 

রহস্যজনক হও - কবিতার মৃত্যু হোক।

হবে কি?


ঝরঝংকার


এক-একটা কণা ঝরে পড়ছে উপর থেকে

আকাশ যেন ক্রমে অস্পষ্ট মনে হচ্ছে

দিনের আলো মিশে যাচ্ছে রঙে বেরঙে 

কণার অধঃপতনের সাথে

রাতের একাকীত্ব মশকরা করছে

আলিঙ্গনের অভাবে উদোম নৃত্য অনেক ভালো

কাকের ভিড়ভাট্টা শুরু হবে এবার শহরের রাস্তায়

রান্নাঘরের খোলা জানালায়

দেশি মদের দোকানের চাতালে

গতকালের তীক্ষ্ণ চোখের একটা চক্কর মনে পড়ে



নারীর সতীত্ব বিষয়ক উপপাদ্য


তিনি এবং আমি 

তিনি মানে হীরের নেকলেস

আমার ভিক্ষার চাতালে এসে পড়েছিলেন তিনি

রামধনু ছিটকে পড়েছিল আমার কিনারে

একটা আকর্ণবিস্তৃত হাসির মতো

গোলাপি স্বপ্ন রূপালি হয়ে গেল দয়ায়

একটা আস্ত সমুদ্র সুখ হয়ে

চিতিয়ে পড়ল আমার চলার পথে

তবু তিনি এখন শত্-প্রতিশত্ সতী

সবাই জানে আমি এক অ্যালুমিনিয়ামের থালা।


মনের রঙচাবি


তুমি কি সেই হাভাতে পীড়িত প্রাণী

যে কেবল ব্যথায় কাতর সর্বদা

এক ফসলি শেষ ফলন তোমার পাঁজর ফাটিয়ে

ছাদের উল্টো পীঠে তাকায়

তোমার বিমূর্ত প্রতিলিপি

ফুলের মধ্য থেকে ফাঁদে পড়া নেশার 

ডাঁটা চিবোতে থাকে

আত্মজা শরীর থেকে অদৃশ্য পৌরুষে

নিজের উত্তাপকে শীতল করে তোমার 

অগ্নি নির্বাপক ইচ্ছার সন্তানেরা।

বোবা-শব্দে প্রতিবাদ করি উভয়ে 

হারিয়ে যায় পুং ও স্ত্রী আবেগগুলো


কিভাবে

এবং বাঁশের বাঁশি সুরে সুরে কিভাবে জাদুকর হয়

কিভাবে দাবানল সবেগে ধাবিত হয়

কিভাবে যৌনতার অঙ্কুর যুবকের মতো সরীসৃপ হয়

কিভাবে সব সম্ভাবনা সরিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে প্রজন্ম

কিভাবে স্বর্গের সরোবরে হংসপুরুষ সাঁতরে চলে

কিভাবে নদীর বহমানতায় জড়ভরত ভাসে ভেলায়

কিভাবে ঝলসানো পড়াশোনা ডি লিট পায়

কিভাবে উদ্ভিদ তার স্ত্রীকে আলিঙ্গন করে

ঘুমে কাদা স্ত্রীলোক কিভাবে শুনবে এসব!

অলঙ্কার আর লজ্জাবস্ত্র স্তনের উপর গড়াগড়ি যাক 

বৃষ্টি পড়ে মহাবিশ্বের পাগল কেন্দ্রবিন্দুতে

স্নান জলের অভাবে মৃত্যু অরন্ধন পালন করে কিভাবে



চিত্র ৫ 


নীল জলের সাদা লিলি সেই কলেজ মেয়ে

সঙ্গীতের সম্রাজ্ঞী তাই বীতরাগের প্রেয়সী

তার স্বপ্নময় মুখচ্ছবিগুলি আবলুস পিয়ানোয়

ঝঙ্কার তোলে নীল থেকে সাদা স্বরলিপিতে

যে কৃষক ফেলে রেখে গেছে তার লাঙ্গল

অথবা মাছ ধরা জেলের পড়ে থাকা ভেজা জাল

যন্ত্র আর যন্ত্রীর প্রেমের মতো নির্মাণ বিশুদ্ধ হলেও

তোমার প্রতিকৃতি তোমারই খুঁত ধরে

জলের মধ্যে তোমার মানপুরুষ শায়িত

যাবতীয় উৎসাহ এখন যন্ত্রনায় সংকুচিত কপোত 

ফসল তোলা গানের সুরে চমরী গাই-এর গোঙানি

শুনি, ওল গাছগুলো গাঁদা ফুলের চুম্বনে লজ্জিত



ছেনি, পাথর এবং ঘুম


গানের মধ্যে গান আমার

ঘুমের মধ্যে ঘুম

একখণ্ড এলোমেলো পাথরে জ্যোৎস্না অস্থির

ছেনির ধারে কত শত পাথর

মুখের মধ্যে মুখ

নারী দেহের বিবর্তনে পাথর কুঁদে স্থবির

কোলের খাঁজে শিশু আটকে

স্তনের মধ্যে স্তন

অসীম দূরত্বে দুগ্ধপান ঘুম ঘিরেছে চোখ

সময়ের বোঝা রাতের হুমকি

আত্মার মাঝে আত্মা

ছেনির মারে রক্ত ঝরে ঘণ্টা বাজায় লোক



সুগন্ধী বৃষ্টি


যে রাস্তায় যাই  না কেন সুগন্ধটা ফিরে ফিরে আসে

আমার নাকের চারপাশে অবিরাম ঘোরে

যেন সুগন্ধী ফুল কেউ বেঁধে দিয়েছে

আচমকা চুমু খাওয়ার গালে

কেমন করে সম্ভব হলো বলো!

আমি নিশ্চিত, যেন চন্দন ঘষে দিয়েছ অদৃশ্য হাতে

অথবা দখিনা বাতাস চাঁপার সুগন্ধী ছড়িয়েছে,

সেই বাতাস চন্দ্রভাগা হয়ে বয়ে যায় 

যখন রাতের ঝরঝর বৃষ্টি মেতে ওঠে ঝমঝমে।

ফুলের গুচ্ছচেহারা উঁকি দেয় আর 

আকাশের নীল আড়াল লুকিয়ে থাকে চোখে;

একটি লাল-হলুদ শামিয়ানা উৎসবে

আতিথ্যে জোটে বৃষ্টির ধ্বনি টুপ টুপ মিহিশব্দে।

উলঙ্গ ফুলের ঝোপের ভিতর উদাসীন বৃষ্টি

আমার স্মৃতিকে ধাক্কা দিয়ে অতিক্রম করে

ভাসমান ভেলার বাহারি রৌপ্য ডিঙা।

সূর্যঘুড়ি গাছের শাখায় লতাজুড়ে ফুল ফোটে,

বসন্তের পেছনে পেছনে আসে  শুষ্ক সমীরণ আর

জুঁই ফুলের বৃষ্টি-নেশা গন্ধ।

ভরা বসন্তে অসুখে পড়েছে মিষ্টি মিষ্টি মেয়েরা

তাদের নরম বয়সের নীরব লজ্জা

পাপড়ির আবরণ খুলে খুলে প্রদর্শিত হবে –

আমার ছদ্মবেশ স্বপ্নাত্মা দু-চোখ ভরে দেখবে।

এখনও এমন স্মৃতি বৃষ্টির সুবাস নিয়ে হাজির হয়,

পা টেনে টেনে চলে আমার হাস্যকর জীবনে 

বৃষ্টি থেকে অনাবৃষ্টি পর্যন্ত অদ্ভুতভাবে,

সুগন্ধী ঘ্রাণে হৃদয়ের প্রত্যাবর্তন অনিবার্য হয়।

"পরম চেতনার পথে কবিতা" ( লেখক অরুণ দাস ) বইটি সম্বন্ধে পাঠ প্রতিক্রিয়া ।। চিত্রা ভট্টাচার্য্য, Chitra Bhattacharya

"পরম চেতনার পথে কবিতা" ( লেখক অরুণ দাস ) বইটি সম্বন্ধে পাঠ প্রতিক্রিয়া।  চিত্রা ভট্টাচার্য্য " পরম চেতনার পথে কবিতা ;'...